Saturday, March 8, 2025

সরকারের স্বার্থে নয় জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে পুলিশকে কাজ করতে হবে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক (খোরশেদুল ইসলাম)

৫ই আগস্টের পরে ইতিমধ্যেই সাত মাস অতিক্রান্ত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনায় নানান পদক্ষেপ নিলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি সামান্যই। বিশেষত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। পুলিশ কাজে ফিরলেও, মাঠে যৌথ বাহিনী থাকলেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ‘জনতার চোখঽ মুখোমুখি হয়েছিল সাবেক পুলিশ প্রধান নূরুল হুদার। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত পাঠকের জন্য প্রকাশিত হলো- 
 

প্রশ্ন: ৫ই আগস্টের পরে নতুন প্রেক্ষাপটে পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে, সার্বিক পরিস্থিতি কেমন দেখছেন?
-দেশে বিরাট বড় একটা ঘটনা ঘটে গেছে, যেখানে পুলিশকে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করতে হয়েছে এবং তারই ক্ষেত্রবিশেষে পুলিশ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। প্রথমদিকে পুলিশ প্রশাসন ভেঙে পড়েছিল। সেজন্য তাদের কাজ গতিহীন ছিল। তবে তারা তা কাটিয়ে উঠতে পারবে এবং কাটিয়ে উঠছে। পুলিশ বাহিনী আইনের অধীনে দায়িত্ব পালন করে। তারা যদি আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করে তখন সমস্যা হয়।
 


প্রশ্ন: পুলিশ বর্তমানে মাঠে কাজ করলেও তাদের মধ্যে একটা ভীতি রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের পুরোপুরি সক্রিয় বা তাদের মনোবল কীভাবে ফিরে আসবে। উত্তরণের পথ কি?
-পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল প্রথমদিকে। তখন বিভিন্ন পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। আইনবহির্ভূত কাজ করার জন্য যে সমস্ত অফিসাররা দায়ী দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। আর যাদেরকে সরকারি চাকরিতে রাখার আর প্রয়োজন নেই জনস্বার্থে তাদেরকে চাকরি থেকে বিদায় করতে হবে। এই কাজগুলো নেগেটিভ কাজ, এটি দ্রুত করতে হবে। আমার মনে হয় একটু দেরি হয়ে গেছে। সেটি না হলে পজিটিভ যে কাজগুলো তা করতে দেরি হবে।
 


প্রশ্ন: বর্তমান সময়ে পুলিশের ভূমিকা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি- খুন-খারাবি বেড়েছে, ছিনতাই আতঙ্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ। নিরাপত্তা আতঙ্কে রয়েছে মানুষ। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর করণীয় কি?
-সরকারের স্বার্থে নয়, জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে পুলিশকে কাজ করতে হবে। পুলিশের দুইটি কাজ করা উচিত। একটি কাজ হচ্ছে- অপরাধ এবং শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। কোনো ঘটনা ঘটার আগে প্রতিরোধমূলক কাজ করা। আরেকটি কাজ কোনো ঘটনা ঘটে গেলে সেটি তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা। অর্থাৎ পুলিশের এই প্রতিরোধমূলক কাজটি খুব বেশি মাত্রায় করতে হবে যাতে তাদের উপস্থিতিটা সবাই বোধ করে এবং এটি অপরাধ পরিস্থিতির উপর একটা প্রভাব ফেলে। আর তারপরেও যে সমস্ত ঘটনা ঘটবে, কেননা পৃথিবীর সব জায়গায়ই এসব ঘটনা ঘটতে থাকে। সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা। আইনের কাজগুলো দ্রুত গতিতে করতে হবে। এগুলো চলমান থাকলে পরিস্থিতি ফিরে আসবে। আর সমাজের তরফ থেকে একটা সাপোর্ট দরকার। সাপোর্ট মানে বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্রুপ যারা আছেন তাদেরকে পুলিশের কাজে সহায়তা দিতে হবে এবং পুলিশের কাজ যাতে দলমতনির্বিশেষে তারা তাদের আইন প্রয়োগ করতে পারে সেই বন্দোবস্ত করতে হবে।
 

প্রশ্ন: গণ-অভ্যুত্থানের পূর্বেও ঢালাও বা গায়েবি মামলা হয়েছে। পরবর্তী সময়েও গায়েবি মামলার অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে, এক মামলায় অসংখ্য মানুষকে আসামি করা হয়েছে- এতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে কীভাবে?
-মামলার অভিযোগ দিলেই নিতে হবে এই ব্যাপারে পরিষ্কার না আইনকানুনে। বলা হয় যখন কোনো অভিযোগ আসবে তখন অভিযোগ নিতে হবে। তারপরে সেটির সত্যতা তদন্তের মাধ্যমে দেখা হবে। অতএব লোকজন যদি অভিযোগ নিয়ে আসে যেগুলো বানোয়াট সেগুলো তদন্ত করে বলতে হবে বানোয়াট। আগে বানোয়াট না বললেই ভালো। আগে যদি পুলিশ মামলা না নেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে। সে জন্যই পুলিশ অফিসাররা এটী করে, অভিযোগ যেই করুক সেটি দেখা হচ্ছে। এইরকম অসংখ্য লোককে আসামি দিলে সেক্ষেত্রে যুক্তিসংগত সন্দেহ থাকতে পারে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে এধরনের কেস না নিতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু বইতে লেখা আছে কেউ মামলা করতে আসলে সেটিকে না নেয়ার উপায় নেই, নিতে হবে। সেজন্য এখানে উভয় পক্ষের কাছেই আশা করতে হবে তারা তাদের বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করবে। মামলা করলেই গ্রেপ্তার করতে হবে- এ কথা কোথাও লেখা নেই। অতএব প্রত্যেকটি ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে কাজ করতে হবে। লোকের ধারণা আগে এফআইআরে নাম থাকলেই তাকে ধরতে হবে। এটি কোথাও লেখা নেই, কোথাও বলা নেই। পুলিশের কাজ হচ্ছে সত্যটা বের করা। পুলিশ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলে মানুষ হয়রানির শিকার হবে না। পুলিশকে আইনের ভাষা বুঝতে হবে। তবে আরেকদিকেও যাতে এরকম ব্যাপক মামলা না দেয় সেজন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে বিভিন্ন গ্রুপকে তাদেরও সচেতন হতে হবে, সেটিরও প্রয়োজন আছে।
 

প্রশ্ন: যেসব পুলিশ অফিসাররা মামলায় জড়িত আছেন বা গ্রেপ্তার হয়েছেন বা বিগত বছর ও অভ্যুত্থানে যাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ, তাদের কর্মকাণ্ডে পুলিশ বাহিনীর উপরে কী ধরনের প্রভাব পড়েছে?
-এর প্রভাব কিছুটা হবে, তবে এগুলোকে দ্রুত তদন্ত করতে পারলে বা তদন্ত করে যেখানে বিভাগীয় অ্যাকশন নিতে হবে সেখানে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে আর যেখানে ফৌজদারি মামলা হয়েছে সেগুলো দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। যারা ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী তাদের তো চাকরী থাকবে না- এটির নিয়মই আছে। অনেকের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, অনেকে বিতর্কিত হয়ে গিয়েছিল আবার অনেকের বেআইনি ভূমিকা ছিল সেগুলোর সংখ্যা বিরাট বলে মনে হয় না। এইগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। 
অনেকে অতি উৎসাহী ছিল, সেখানে বলে দেয়নি সরকার, কর্তৃপক্ষ দায়ী হবে। রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ যারা বেআইনি আদেশ দিয়েছে তাদেরও ধরতে হবে। শক্তি প্রয়োগ তো রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ করেনি, শক্তি প্রয়োগ বাহিনী করেছে সেখানে তার যদি বল প্রয়োগটা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে থাকে তাকে সেটি জবাবদিহি করতে হবে। বল প্রয়োগের ক্ষমতা তাকে আইনত দেয়া আছে। এটা প্রয়োগ করতে গিয়ে যদি সে বিচার-বিবেচনা না করে তবে তাকে সেটির জবাব দিতে হবে।
 

প্রশ্ন: বর্তমান সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতোটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে? কোথাও কোথাও অভিযানে গিয়ে পুলিশ হামলার শিকারও হচ্ছে, আগামীতে দেশ ও মানুষের প্রতি পুলিশের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?
-আগামীতে নিশ্চয়ই পরিস্থিতি ভালো হবে। আর যখন পুলিশ যাবে নিশ্চয়ই তারা প্রত্যেকটি ঘটনার থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট করবে, সেখানে কীরকম ঝুঁকি আছে। একদল লোক থাকবে এ সমাজে সবসময়ই যারা এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে। অতএব তারা যাতে সুযোগ সৃষ্টি না করতে পারে সেখানে পুলিশকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় এবং যথাযথ অস্ত্রে সজ্জিত হয়েই যেতে হবে। এবং তাদের কাছে খবর থাকাটা খুব জরুরি যে, কোন কোন এলাকায় এ ধরনের লোক আছে অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িত। এই ইনফরমেশনটা যত ভালো থাকবে তার কাজটা তত ভালো হবে।
 

প্রশ্ন: সেনাপ্রধান বলেছেন কোনো বাহিনীকে আন্ডারমাইন করা যাবে না- এ ব্যাপারে আপনার মত কি?
-সেনাপ্রধান যথার্থই বলেছেন। যাদের যা কাজ সেই কাজ করতে গিয়ে যদি অনবরত সমালোচনা হয় এবং সেইসব সমালোচনা যদি তথ্যনির্ভর না হয় তখন এর একটা নেতিবাচক মনোভাব পড়ে। তারা তো প্রজাতন্ত্রের কাজ করতে এসেছেন, ব্যক্তিগত কাজ করতে আসেননি। অতএব, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে, বিভিন্ন কথাবার্তা বলে তাদেরকে মনোবল ভেঙে দেয়ার চেষ্টা। এটা তো যারা এই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চায়- এটি তাদের একটি উদ্দেশ্য হতে পারে। অতএব, তারা যাতে ঠিকমতো কাজ করতে পারে আইনত সেই বন্দোবস্ত সমাজকে করতে হবে।
 


প্রশ্ন: অপারেশন ডেভিল হান্ট দিয়েও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি কেন?
-ডেভিল হান্টে কিছুটা কাজ হচ্ছে। ডেভিল হান্ট দিয়েই যে কাজ হবে- এমন তো কোনো কথা না, এটা একটা বিশেষ অভিযান। প্রতিরোধ করার জন্য তথ্য থাকতে হবে। কোথায় অপরাধীরা সক্রিয়, কোন এলাকায় অপরাধী বেশি- এগুলোর জন্য অনেক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে; তাহলে কাজগুলো আরও সহজ হয়ে যাবে। তারপরও কিছু ঘটনা ঘটবে। সেগুলোকে দ্রুত তদন্ত করতে হবে। পুলিশকে ব্যাপক সংখ্যায় তাদের উপস্থিতিটা জানাতে হবে লোকজনকে। তাতে লোকজনের মধ্যে অপরাধের ভয়-ভীতিটা না থাকে। আর পুলিশের মনোবল শক্ত রাখতে হবে, ভেঙে পড়া পুলিশের কাজ নয়। তার কাজই জনগণের ভীতিটা দূর করা। পুলিশের ট্রমা এখন থাকার কথা না। তবে থাকলে সেটি ফোর্স অফিসারদের দেখতে হবে এই ট্রমাটা কিসের জন্য। পুলিশকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় মাঠ পর্যায়ে যেতে হবে, অ্যাকশন নিতে হবে। এবং যারা আইন হাতে নিচ্ছে, মব সৃষ্টি করছে বা অপরাধমূলক কাজ, চাঁদাবাজি করছে সে দলেরই হোক তাদেরকে ধরতে হবে। পুলিশকে জোর করে বা চাপে পড়ে কোনো মামলা নিতে হলে এমন কোনো কথা নেই যে, অ্যাকশন নিতে হবে- এমন কোথাও বলা নেই। আইন মান্য করা একটা সংস্কৃতি। আমাদের এখানে ডেভেলপ করা দরকার। সব সময় অথরিটি মানেই খারাপ, কর্তৃপক্ষ মানেই খারাপ- এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আর যারা সরকারি কাজে আছেন তারাও এই দেশে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। তারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না হতে পারেন কিন্তু তারা মনোনীত প্রতিনিধি। তারা একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে এসেছেন। অতএব তাদেরকেও তাদের দায়িত্বটা বুঝতে হবে। এবং একটা শৃঙ্খলা যেখানে আছে, অর্ডার আছে, ক্রাইম কম আছে- এরকম একটা সমাজ আমাদের সবার কাঙ্ক্ষিত। অতএব এখানে সামগ্রিকভাবে ওই চেষ্টা করতে হবে। এখানে কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্ব আছেই। আর যারা কাজ করতে আসছে তাদেরও সাহস করে কাজটা করতে হবে। এই ট্রমাটাইজ হয়ে আছি, এই অভিযোগ বা এই কথা এখন লোকে শুনতে রাজি না। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই কাজটা দুর্বল লোকের জন্য না। এটা সবল-সুঠাম লোকদের কাজ। তাকে তার সবলতা, তার সুঠামতা প্রমাণ করে নিতে হবে তাদের কাজ দ্বারা। আইন প্রয়োগ করতে গেলে দয়া-মায়া করা যায় না। সবসময় তাকে আইনের আওতায় কঠোর হতে হবে। পুলিশিংয়ের কাজ আনন্দের কাজ না, অত্যন্ত অপ্রীতিকর ও অস্বস্তিকর একটা কাজ। এই অপ্রীতিকর ও অস্বস্তিকর কাজ যারা করতে এসেছে তাদের দৃঢ়চেতা হতে হবে। তাদের অ্যাকশন নিতে হবে, কিছু ভুল হবে সেখানে কর্তৃপক্ষ দেখবে।
আমি যখন পুলিশ প্রধান ছিলাম- তখন সমস্যা কম ছিল, এখন সমস্যা বেশি। এবং তখন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা ডিপার্টমেন্টে বেআইনি হস্তক্ষেপের মাত্রাটা কম ছিল। এখন মাত্রাটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। রাজনীতির মধ্যে যারা আছেন তারা মনে করেন যে, তারাই রাষ্ট্র। রাষ্ট্র আর সরকারের পার্থক্যটা তারা গুলিয়ে ফেলেন। এটা করতে গিয়ে আমরা যা বলি সেটাই আইন, আইন আইন না এরকম একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফেলেছে। যার ফলশ্রুতি এখন আমরা দেখছি। আমাদের রাষ্ট্র ও সরকারের পার্থক্যটা বুঝতে হবে। যারা শাসন করবে তারা আইনানুগ ভাবে শাসন করবেন এবং আইন না মানলে কি অবস্থা হয় এটা আমরা বর্তমান অবস্থা দেখে বুঝতে পারছি। সমাজে যখন অন্যায়ের পাল্লাটা ভারী হয়ে যায় তখন তার একটা প্রতিক্রিয়া হয়- সেই প্রতিক্রিয়াটাই আমরা দেখেছি এর মধ্যে। বিভিন্ন পর্যায়ের লোকের যে বঞ্চনা বা বঞ্চনার প্রতিকার না হওয়া সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। 

শেয়ার করুন